ডেস্ক নিউজ : বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছিল ৮ মার্চ। সেই হিসেবে সেপ্টেম্বরের ৮ তারিখ ছয় মাস অতিবাহিত হয়েছে। এই ছয় মাসে লকডাউনসহ সড়কে গাড়ি চলাচল ছিল সীমিত কিন্তু সড়কে মৃত্যুর মিছিল থেমে নেই। সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনায় অসংখ্য প্রাণ ঝরেছে, যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কোন অংশেই কম নয়।
যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘রোড সেফটি ফাউন্ডেশন’-এর তথ্য মতে, গত মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত ছয় মাসে এক হাজার ৫০৭টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন এক হাজার ৯৫৫ জন। আর আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৫৯৮ জন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য মতে, গত ২৪ মার্চ থেকে সারা দেশে সাধারণ ছুটির সঙ্গে গণপরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। তারপরও মার্চ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪২৭ জনের মৃত্যু হয়।
এপ্রিলজুড়ে দেশের সড়ক-মহাসড়কগুলোতে পুরোপুরি বাস-গণপরিবহন চলাচল বন্ধ ছিল। কিন্তু এপ্রিলে ১১৯টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে, আর এতে নিহত হন ১৩৮ জন।
মে মাসেও সাধারণ ছুটি অব্যাহত থাকায় সড়ক ছিল অনেকটা ফাঁকা। তারপরও মে মাসে ২১৩টি দুর্ঘটনায় ২৯২ জনের মৃত্যু হয়।
১ জুন থেকে দেশে সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয় সরকার। ফলে জুন থেকে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর হার আগের মতো বেড়ে যায়। জুনে ২৯৭টি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ৩৬১ জনের।
একই ধারা অব্যাহত থাকে জুলাই-আগস্টেও। ওই মাসে ২৯৩টি দুর্ঘটনায় নিহত হয় ৩৫৬ জন। সর্বশেষ আগস্টে ৩০২টি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৭৯ জনের।
১ জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত সড়কে সীমিত পরিসরে পরিবহন চলেছে। সাধারণ ছুটির সময় সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহত তুলনামূলক কমলেও ছুটি শেষে দুর্ঘটনা আবার বেড়েছে। অর্থাৎ এ তিন মাসে দুর্ঘটনা যেভাবে বেড়েছে, সেভাবে বেড়েছে মৃত্যুও।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, বিআরটিএ-এর সক্ষমতার ঘাটতি সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধির প্রধান কারণ।
অপরদিকে পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সড়ক-মহাসড়কের ত্রুটি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অদক্ষ চালক, মানুষের ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতা, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর দুর্বলতাসহ বিভিন্ন কারণে দেশে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা কমছে না।